টিএসসির আড্ডায় প্রাণবন্ত তারুণ্য

প্রকাশঃ মে ১৬, ২০১৫ সময়ঃ ২:০০ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৬:৩৩ অপরাহ্ণ

সাদিয়া হুমায়রা, প্রতিক্ষণ ডটকম:

du-adda-tscসোমা ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী। পড়াশোনা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে। ক্লাস শেষ হওয়া মাত্রই তাকে বন্ধুদের সঙ্গে ছুটতে দেখা গেল টিএসসিতে। সেখানে অপেক্ষা করে আছে অন্যান্য বিভাগের আরও সব বন্ধু। কিছুক্ষণের মধ্যেই শুরু হবে তাদের প্রাণবন্ত আড্ডা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক প্রাণকেন্দ্র টিএসসিতে গেলেই দেখা মেলে আড্ডারত এমন সব উচ্ছ্বল তরুণ-তরুণীদের।

যারা বাড়ি থেকে দূরে থাকার যন্ত্রনা, পরিবারের সঙ্গে বিচ্ছেদ, পড়াশোনার চাপ সবকিছু থেকে মুক্তি পেতে ছুটে আসে টিএসসিতে, মেতে ওঠে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডায়।

কি নিয়ে আলোচনা হয় বন্ধুদের আড্ডায়? ঠিক কি বিষয়ে তর্ক-বিতর্ক করে টিএসসি সরগরম করে ছেলেমেয়েরা? অনেকের ধারণা, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা কেবল প্রেম, ফ্যাশন, গ্যাজেট বা ব্যক্তিগত সমস্যা নিয়ে আড্ডা দিয়ে সময় নষ্ট করেন। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, টিএসসির সবুজ মাঠে, ক্যাফেটেরিয়ায় বা ক্যাফেটেরিয়ার বারান্দায় বসে যে সকল নবীণ ছাত্র বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেন সে আড্ডার বিষয় রাজনীতি, অর্থনীতি, তথ্য-প্রযুক্তি থেকে শুরু করে ধ্রুপদি সাহিত্য বা চলচ্চিত্র পর্যন্ত বিস্তৃত। সঙ্গে পড়াশোনা ও ভবিষ্যতের ক্যারিয়ার পরিকল্পনাতো থাকেই।

আড্ডা দিতে টিএসসিতেই আসা কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে আড্ডারত কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, টিএসসির সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে এখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরের বন্ধুদের সঙ্গেও আড্ডা দেওয়া যায়। হলে, বিশেষ করে ছাত্রী হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরের বন্ধুবান্ধব, এমনকি অন্য হলের শিক্ষার্থীদের সঙ্গেও আড্ডা দেওয়া যায়না। এছাড়া বিভাগে বা ক্লাসরুমে হৈচৈ করাটাও সমীচীন নয়। তাই বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করার, প্রাণখুলে কথা বলার সবচেয়ে ভালো জায়গা হচ্ছে টিএসসি। এছাড়া টিএসসির পরিবেশ মোহনীয় এবং ক্যাফেটেরিয়ায় বসে স্বল্পমূল্যে নানারকম খাবার খাওয়ার সুবিধা আছে। আর কে না জানে যে টুকটাক নাস্তা বাঙালির আড্ডার অন্যতম অনুষঙ্গ!

টিএসসির আরো একটি গুরুত্বপূর্ন অনুষঙ্গ হচ্ছে এখানে বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক বেশিরভাগ সংগঠনের কার্যালয় অবস্থিত। তাই যারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদের সঙ্গে যুক্ত কিংবা আবৃত্তি শেখার ইচ্ছা পোষণ করে তাদেরকে টিএসসিতে আসতেই হয় এবং বন্ধুদের সঙ্গে চলচ্চিত্র কিংবা আবৃত্তি সংক্রান্ত আলোচনাটা তারা হয়তো টিএসসিতেই সেরে নেয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে কিন্তু টিএসসিতে আড্ডা দেয়না এমন শিক্ষার্থী খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। টিএসসির উজ্জ্বল রোদ, মুক্ত বাতাস গায়ে না মেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন শিক্ষার্থীই যেন বন্ধুদের সঙ্গে সম্পর্কটাকে পূর্ণতা দিতে পারেনা, এমনকি পারেনা দেশ, সমাজ ও পৃথিবী সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা লাভ করতে।

আজ যে তরুণ-তরুণীরা টিএসসির মাঠে ঘাসের ওপর গোল হয়ে আড্ডা দিচ্ছে অথবা তরুণ-তরুণীদের যে দলটি ক্যাফেটেরিয়ায় বসে হাসি-ঠাট্টা করছে তারা যদি আড্ডার আনন্দের পাশাপাশি আড্ডা থেকে সমাজ ও জাতির জন্য কল্যাণকর কোন চেতনা আহরণ করতে পারে তবেই সে আড্ডা পরিপূর্ণরূপে সার্থক হয়ে উঠবে।

প্রতিক্ষণ/এডি/জহির

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G